রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২ নম্বর ইউনিট
- By Jamini Roy --
- 12 November, 2024
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম কয়লাভিত্তিক ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২ নম্বর ইউনিটটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। এই রক্ষণাবেক্ষণ কাজ চলবে প্রায় দুই মাস। ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট চালু রেখে ৬২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, শীতকালে বিদ্যুতের চাহিদা তুলনামূলক কম থাকে। তাই মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়েই এই সময়টিকে বেছে নেওয়া হয়েছে, যাতে দেশে বিদ্যুতের ঘাটতি না হয়।
পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জোবায়ের আহমেদ জানান, আগামী দুই মাসের মধ্যে ২ নম্বর ইউনিটের যাবতীয় মেরামত শেষ করে উৎপাদনে ফিরিয়ে আনা হবে। তিনি বলেন, "শীতের সময় বিদ্যুতের চাহিদা অনেক কমে যায়, তাই এই সময়ে উৎপাদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।"
পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী শাহ আব্দুল মওলা জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রাখতে দেশে অন্যান্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং গ্যাস ও অন্যান্য উৎস থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত থাকবে। ফলে বিদ্যুতের ঘাটতির সম্ভাবনা নেই। এ রক্ষণাবেক্ষণ কাজটি চীনের সঙ্গে করা চুক্তির আওতায় হওয়ায় বাড়তি কোনও খরচ হবে না।
২০১৪ সালে বাংলাদেশের নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি এবং চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) মধ্যে যৌথ উদ্যোগে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর পরের বছর বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড গঠন করা হয় এবং ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ার ধানখালীতে এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ২০২০ সালে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যায় এবং এটি এখন দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎকেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে।
এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয় ১২ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা, যার মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে চীনের এক্সিম ব্যাংক ও চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক। চীনের সঙ্গে এই ঋণ চুক্তির আওতায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ কাজ চলছে। পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিটে বিরতিহীনভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আসছিল। তবে নির্দিষ্ট সময় পর যন্ত্রের সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য এই কাজ চলছে।
পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ১৩২০ মেগাওয়াট, যা দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চলমান রক্ষণাবেক্ষণ কাজ শেষ হলে কেন্দ্রটির পুরো সক্ষমতা পুনরায় ফিরিয়ে আনা হবে এবং এটি আরও কার্যকরভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম হবে।